ঢাকামঙ্গলবার , ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • অন্যান্য
  1. অনুসন্ধানী, বিশেষ ও ধারাবাহিক
  2. অপরাধ-আইন ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি, টেলিকম ও ই-কমার্স
  5. আবাসন-ভূমি-রাজউক-রিহ্যাব
  6. উদ্যোক্তা
  7. করপোরেট ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
  8. কৃষি, খাদ্য ও পরিবেশ
  9. গণমাধ্যম
  10. গৃহায়ন ও গণপূর্ত
  11. জনশক্তি ও পর্যটন
  12. জনসংযোগ-পদোন্নতি ও সম্মাননা
  13. জাতীয়
  14. ডিএস‌ই- সিএস‌ই-বিএস‌ইসি
  15. নগরজীবন

তীব্র তাপদাহে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো রয়েছে সতর্ক অবস্থানে

শিকদার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী মুরাদ, ঢাকা
এপ্রিল ২৩, ২০২৪ ৩:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

*এখন পর্যন্ত কোন অসুস্থতার খবর পাওয়া যায়নি 

*কোন কোন কারখানায় পর্যাপ্ত স্যালাইন ও লেবুর শরবত ব্যবস্থা রয়েছে

*তীব্র তাপদেহের পাশাপাশি লোডশেডিংও চরমে 

তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ। ঘোষণা করা হয়েছে হিট এলার্ট। তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে বন্ধ ঘোষণা। ঈদের পর শিল্প কারখানায় পুরো দমে উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাতে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। কিন্তু সে তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়েনি। গরমের সঙ্গে সঙ্গে লোডশেডিংয়ের বীড়ম্বনা ও রয়েছে প্রতিনিয়ত।

এতে তীব্র গরমের পাশাপাশি লোডশেডিং এর কারণে কারখানার শ্রমিক ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ বেশি কষ্টে রয়েছেন।

এদিকে তীব্র তাপদাহের কারণে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক ভাইবোনদের জন্য বিজিএমই থেকে দেয়া হয়েছে নির্দেশনা। নির্দেশনা ফ্যাক্টরির মালিকরা ঠিকমতো মেনে চলছেন এমনটি বলছেন বিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান কচি। তিনি উদ্যোক্তা বাংলাদেশকে বলেন, তীব্র তাপদাহে

সারাদেশের মানুষ কষ্টে আছে। এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। আমরা প্রতিটি কারখানার মালিকদেরকে সরকারের জারিকৃত ও আইসিডিডিআরবি নির্দেশনা প্রজ্ঞাপন আকারে সব ফ্যাক্টরিতে পৌঁছে দিয়েছি এবং সুস্থ থাকার জন্য যা যা করণীয় সব নিদর্শনা দেওয়া হয়েছে। এস এম মান্নান কচি আরো বলেন, শ্রমিক ভাইবোনদের কোন রকমের কষ্ট না হয় সে ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের সকল ফ্যাক্টরিতে কমপ্লায়েন্স রয়েছে। পর্যাপ্ত আলো বাতাস ফ্যান এসি এবং স্বাস্থ্যের জন্য পানি জাতীয় খাবার যদি কোন শ্রমিক ভাই বোন অসুস্থ হয় গাড়ির ব্যবস্থা ও দ্রুত চিকিৎসার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা বা অসুস্থতার কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি। বিজিএমইএ ও কারখানার মালিক ভাইয়েরা সবসময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

বিজিএমএ পরিচালক ও শিন শিন গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ সোহেল সাদাত উদ্যোক্তা বাংলাদেশকে বলেন, প্রতিবছরের এ সময়টা আমাদের মানসিক প্রস্তুতিতে বেশি থাকতে হয়। বর্তমানে বেশি হিট হচ্ছে। আমরা বিজিএম‌ইএর দিক নির্দেশনা মেনে চলছি। আমরা শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিচ্ছি। কেননা শ্রমিক সুস্থ না থাকলে কাজ বন্ধ থাকবে তারা অসুস্থ হলে দেশের জন্য যেমন ক্ষতিকর প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর এবং তাদের ঘরের জন্য ক্ষতিকর। তাই শ্রমিকদের সুস্থ রাখার জন্য আমরা সর্বাত্মক ব্যবস্থায় রাখছি। আমার ফ্যাক্টরি গুলোতে প্রতিটি শ্রমিকে খাবার স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে লেবু শরবত ও বারবার সরবরাহ করা হচ্ছে। আমাদের ফ্যাক্টরি পরিবেশবান্ধব খোলামেলা বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যাপ্ত এসি ও ফ্যানের ব্যবস্থা রয়েছে। আমি দেখেছি বাহিরের চেয়ে ফ্যাক্টরির ভিতরে গরম কম। সাভার ও নারায়ণগঞ্জে আমার ফ্যাক্টরিতে গিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। শ্রমিক ভাইবোনদের অপ্রয়োজনে বাহিরে যেতে নিরসাহিত করা হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে অপ্রতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি বা কোন শ্রমিক ভাই বোন অসুস্থ হয়নি। এরকম হলে আমাদের প্রত্যেকটি ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি ফ্যাক্টরি এলাকার স্থানীয় হাসপাতালের সাথে চুক্তি রয়েছে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা করা হবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ডাক্তার ও গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে।

এদিকে গাজীপুর কোনাবাড়ি সাভার নারায়ণগঞ্জে লোডশেডিং ঘনীভূত হচ্ছে হচ্ছে।

বিজিএমএ পরিচালক ও স্পারসো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম উদ্যোক্তা বাংলাদেশকে বলেন, পর্যাপ্ত গ্যাস নাই বিদ্যুৎ নাই, শিল্প কারখানা গুলো এনার্জি ঘাটতিতে রয়েছে। গ্যাস বিদ্যুৎ পেতে সরকার প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সব জায়গা আমরা যোগাযোগ করছি। স্পিনিং ও টেক্সটাইলগুলো বিদ্যুতের অভাবে ঠিকমতো চলছে না। আমার গাজীপুরেও ময়মনসিংহের ভালুকায় ফ্যাক্টরি রয়েছে। গাজীপুরে তিন থেকে চার ঘন্টা এবং ভালুকায় পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। বিকল্প উপায় এগুলো চালু রাখতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ শ্রমিকদের বেতন অর্থনীতি চাকা এবং অর্ডার টিকিয়ে রাখার জন্য।

তীব্র তাপদাহ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিজিএমইএ থেকে চিঠি পেয়েছি তারা সরকারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিটি কারখানা চিঠি দিয়েছে। চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। শ্রমিক ভাইবোনদের জন্য আমার ফ্যাক্টরিতে কর্ম ঘন্টা কমিয়ে দিয়েছি। যখন তাপ কম থাকে যেমন সব খুব সকালে কাজের ব্যবস্থা করছি এবং দুপুরে লাঞ্চের টাইম বেশি সময় দিয়ে বিকেলে কাজ করাচ্ছি ।

চিকিৎসকরা বলছেন, সবারই হিটস্ট্রোক হতে পারে। তবে শ্রমজীবী মানুষ যেমন- পোশাক কারখানার শ্রমিক, কৃষক, রিকশাচলকসহ যারা খোলা ও বদ্ধ জায়গায় কাজ করেন, তাদের এ শঙ্কা বেশি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সময়টা খুবই শঙ্কার। হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়ার পাশাপাশি চর্মরোগ, খিঁচুনি, ক্লান্তিবোধ, মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ করেছে। সেখানে বলা হয়, কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললেই হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।

তাপ প্রবাহের সময় ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। আর এ সময় সুস্থতার নিশ্চিতে তারা দিনের বেলায় যথাসম্ভব বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর যদি বের হতেই হয়, তাহলে রোদ এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।

আইসিডিডিআরবি বলছে, এসময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীরা। পাশাপাশি শ্রমজীবী ব্যক্তি, যেমন রিকশাচাল, কৃষক, নির্মাণশ্রমিক তারাও রয়েছেন ঝুঁকিতে।