নিজস্ব প্রতিবেক: শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তাদের আর্থিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ সময়ে কমিশনের নিট আয় পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেড়ে ২৬ কোটি ৬ লাখ টাকায় পৌঁছেছে।
গত ১২ আগস্ট প্রকাশিত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির মোট আয় ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১২২ কোটি ৬০ লাখ টাকা হয়েছে। সমস্ত খরচ বাদ দেওয়ার পর নিট আয় দাঁড়িয়েছে ২৬ কোাটি ৬ লাখ টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএসইসি’র আয়ের প্রধান উৎসগুলো হলো নিবন্ধন, বার্ষিক ও নবায়ন ফি, অনুমোদন ও আবেদন চার্জ, জরিমানা ও দণ্ড, বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি এবং আমানত থেকে প্রাপ্ত সুদ। ২০২৪ সালের জুনের শেষ নাগাদ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪৪০ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ সত্ত্বেও শেয়ারবাজার সেই গতিতে বৃদ্ধি পায়নি। তিনি বলেন, “অর্থনীতির প্রতিটি খাতের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের শক্তিশালী চাহিদা রয়েছে, অথচ এই চাহিদা আমাদের শেয়ারবাজারের আকারের মধ্যে প্রতিফলিত হয় না। বিশেষ করে সংকটের সময়ে বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য শেয়ারবাজারের উন্নয়ন অপরিহার্য।”
রাশেদ মাকসুদ আরও বলেন, বিএসইসি ইতিমধ্যেই শেয়ারবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে গড়ে তুলতে এবং এটিকে একটি নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে চেয়ারম্যান স্বীকার করেন, ২০২৪ অর্থবছরে বাজারে দৈনিক লেনদেন হ্রাস এবং অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সরবরাহে শেয়ারবাজারের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতে মাকসুদ কয়েকটি অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে রয়েছে— অন্যান্য আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে সমন্বয়, বাজার কাঠামো ও ব্যবস্থাপনাকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করা, স্বয়ংক্রিয়তার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিত করা, নজরদারি প্রক্রিয়া জোরদার করা এবং মানবসম্পদকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা।
প্রতিবেদনে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, “একটি আরও আধুনিক, স্থিতিস্থাপক এবং বিনিয়োগকারী-বান্ধব শেয়ারবাজার গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনে কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”