৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শেখ রাকিবুল করিমকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন কোম্পানির সাবেক কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান। নোটিশে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই অর্থ পরিশোধ করতেও বলা হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ছিদ্দিকুর রহমানের পক্ষে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট এস. এম. দেলোয়ার হোসেন মন্টু কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে (পুলিশ প্লাজা, গুলশান, ঢাকা) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, ছিদ্দিকুর রহমান গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সে এরিয়া ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করেছে। তিনি ২০১৯ সালে গার্ডিয়ান লাইফে যোগদান করেন। অসৎ উদ্দেশ্যে কোম্পানির সিইও রাকিবুল হাসান, এএমডি মাহমুদুর রহমান খান, ভিপি আলমগীর হোসেন, এসভিপি আনোয়ার হোসেন, এসভিপি জাফর আহমেদ, ডিআরএম শাহিদুল ইসলাম শান্ত, ব্রাঞ্চ সার্ভিস শামিম হোসেন, কাওছার হোসেন প্রমুখ যোগসাজশে ছিদ্দিকুর রহমানের চার কোটি পঁয়ত্রিশ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেন। যা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধের জন্য বলা হয়েছে।
গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের বক্তব্য : সম্প্রতি, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ও এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একটি বিভ্রান্তিকর লিগ্যাল নোটিশ সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই লিগ্যাল নোটিশে তোলা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ প্রসঙ্গে কোম্পানির অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানানো প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।
২০২৩ সাল থেকে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের একাধিক লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোম্পানির সাবেক কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। ২০২৩ সালে তদন্তের ভিত্তিতে তার ব্যবসায়িক কোড বন্ধ করা হয়। একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর মাসে গ্রাহকের টাকা পরিশোধের অঙ্গীকারনামা দেওয়ার শর্তে তিনি সাময়িকভাবে কাজে যোগদান করলেও, পরবর্তীতে অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থ হন।
অঙ্গীকারনামা ভঙ্গ করার দায়ে ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ এ তাকে পুনরায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সাময়িক বরখাস্ত করার পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারি মাসে একাধিকবার ক্ষমা চেয়ে পুনরায় কাজে যোগদানের আবেদন করেন তিনি। তবে যেহেতু তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান ছিল এবং ২৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনে আবারও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাই তাকে ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে তাকে চূড়ান্তভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
পরবর্তীতে, ২৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে গার্ডিয়ান লাইফ গ্রাহকের টাকা ফেরতের দাবিতে তার বিরুদ্ধে লিগ্যাল ডিমান্ড নোটিশ প্রদান করে। যা তিনি আমলে না নিয়ে, ১৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে কোম্পানির বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নোটিশ পাঠান, যা বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। আমরা পুনরায় স্পষ্ট করে জানাচ্ছি, উক্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং এটি কোম্পানির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে। গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড সর্বদা শ্রম আইন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি এবং কর্পোরেট গভর্নেন্স নীতিমালা অনুসরণ করে পরিচালিত হয়ে আসছে। কোম্পানির সুনাম ক্ষুণ্ণ করার যেকোন অপচেষ্টা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মোকাবিলা করা হবে। আমাদের গ্রাহক, অংশীদার এবং শুভানুধ্যায়ীদের আমরা আশ্বস্ত করছি যে, গার্ডিয়ান লাইফ তাদের প্রতি প্রতিশ্রুত সেবা ও আস্থার মান ধরে রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।