নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা : তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন আগামীকাল শনিবার (৩১ মে)। ঢাকার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেল এবং চট্টগ্রামের র্যাডিসন ব্লু হোটেল বে ভিউ কেন্দ্রে একযোগে সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে।
সংগঠনটির ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচনকেন্দ্রিক তিন জোট—ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তবে ভোটে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের মধ্যে। কারণ, এ দুই প্যানেলই ঢাকা ও চট্টগ্রামে সব পদে প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে ঐক্য পরিষদের প্রার্থী মাত্র ছয়জন। অর্থাৎ মোট প্রার্থী ৭৬ জন। এবারে ভোটার হয়েছেন ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার। আগেরবার মোট ভোটার ছিলেন ২ হাজার ৪৯৬ জন। এবার শুধু সচল কারখানার উদ্যোক্তারা ভোটার হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
নির্বাচনে ফোরামের প্যানেল লিডার বা দলনেতা হিসেবে আছেন রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান। এর আগে সংগঠনের সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। অন্যদিকে সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা হলেন চৈতি গ্রুপের এমডি মো. আবুল কালাম। এক দশক আগে সংগঠনের পরিচালক ছিলেন তিনি।
ফোরামের দলনেতা মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘প্রচার–প্রচারণা বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছি, ভোটাররা নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে যোগ্য নেতৃত্ব আনবেন। আমরা জয়ের বিষয়ে পুরোপুরি আশাবাদী।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভোটকেন্দ্র ঘিরে বহিরাগতদের জড়ো করে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে সম্মিলিত পরিষদ। এ বিষয়ে নির্বাচন বোর্ডে আমরা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিয়েছি। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিজিএমইএর নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া খুবই প্রয়োজন।’
সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা আবুল কালাম বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে নির্বাচন সুষ্ঠ হবে। আমরা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। ’ ভোটকেন্দ্রের আশপাশে বহিরাগতদের জড়ো করার পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
গত বছরের মার্চে বিজিএমইএর নির্বাচন হয়েছিল। তাতে সম্মিলিত পরিষদ সব পদে জয়ী হলেও নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তখন সভাপতি হন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। এরপর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাঁকে আর দেখা যায়নি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হয়। একপর্যায়ে এস এম মান্নানকে সরিয়ে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামকে সভাপতি করা হয়। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। গত ২০ অক্টোবর বিভিন্ন অভিযোগে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নির্বাচন বোর্ড। নির্বাচনে বিজিএমইএর কর্মকর্তাদের যুক্ত করা হয়নি। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন।
ভোটে কারা প্রার্থী: ফোরামের ঢাকা অঞ্চলের প্রার্থীরা হলেন- মাহমুদ হাসান খান (দলনেতা), মোহাম্মদ আবদুস সালাম, কাজী মিজানুর রহমান, মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, ইনামুল হক খান, মো. হাসিব উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ, ভিদিয়া অমৃত খান, এম এ রহিম, শাহ রাঈদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, জোয়াদ্দার মোহাম্মদ হোসনে কামার আলম, এ বি এম শামছুদ্দিন, নাফিস–উদ–দৌলা, সুমাইয়া ইসলাম, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মজুমদার আরিফুর রহমান, মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া, ফাহিমা আক্তার, আসেফ কামাল পাশা, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, রুমানা রশীদ, সামিহা আজিম, রেজওয়ান সেলিম ও ফয়সাল সামাদ। ফোরামের চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রার্থীরা হলেন সেলিম রহমান, মো. শরীফ উল্লাহ, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী, এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাকিফ আহমেদ সালাম, এনামুল আজিজ চৌধুরী, এমদাদুল হক চৌধুরী, মির্জা মো. আকবর আলী চৌধুরী ও রিয়াজ ওয়েজ।
সম্মিলিত পরিষদের ঢাকা অঞ্চলের প্রার্থীরা হলেন মো. আবুল কালাম, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, মির্জা ফায়েজ হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম, তামান্না ফারুক থিমা, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দিন রুবেল, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, মো. শাহদাৎ হোসেন, মো. রেজাউল আলম, ফারুক হাসান, এ কে এম আজিমুল হাই, লিথি মুনতাহা মহিউদ্দিন, মো. আশিকুর রহমান, এস এম মনিরুজ্জামান, মো. মশিউল আজম, মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান, আবরার হোসেন সায়েম, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, সয়েদ সাদিক আহমেদ, মোস্তাজিরুল শোভন ইসলাম, মঞ্জুরুল ফয়সাল হক, সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন, ফিরোজ আলম ও আসিফ আশরাফ। সম্মিলিত পরিষদের চট্টগ্রামের প্রার্থীরা হলেন এস এম আবু তৈয়ব, রাকিবুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, অঞ্জন কুমার দাশ, নাফিদ নবি, সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, মোস্তফা সারোয়ার রিয়াদ, মো. আবসার হোসেন ও গাজী মো. শহীদ উল্লাহ।
ঐক্য পরিষদের খণ্ডিত প্যানেলের ছয় প্রার্থী হলেন মোহাম্মদ মহসিন, দেলোয়ার হোসেন, খালেদ মো. ফয়সাল ইকবাল, এ কে এম আবু রায়হান, মো. মহসিন অপু ও শেখ এরশাদ উদ্দিন।