জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ৮টি জাতীয় উদ্যান, ২০টি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, ৪টি ইকোপার্ক, ১টি উদ্ভিদ উদ্যান, ২টি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া (সোয়াচ অব নো-গ্রাউন্ড ও সেন্টমার্টিন) এবং ২টি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকাসহ মোট ৩৭টি সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে সংরক্ষিত এলাকার সংখ্যা মোট ৫৩টি
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত বাজেটে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বাজেটে এ প্রস্তাব করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাস উপযোগী পৃথিবী গড়ে তোলা এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। ২০১১ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন করা হয় যা বর্তমানে হালনাগাদ করা হচ্ছে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (সিসিটিএফ) পরিচালনার জন্য ২০০৯-১০ অর্থবছর হতে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে যার অধীনে এ পর্যন্ত ৯০৮টি সরকারি এবং ৬১টি বেসরকারিসহ মোট ৯৬৯টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭২১টি প্রকল্প সফলভাবে শেষ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি সরকারের সব উন্নয়ন পরিকল্পনায় গুরুত্ব সহকারে স্থান পাচ্ছে। এ ছাড়া, সব সরকারি প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়নের সময় আবশ্যিকভাবে জলবায়ু সংশ্লেষ বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে আমরা জলবায়ু সংশ্লিষ্ট ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বাজেটে জলবায়ু সংক্রান্ত বরাদ্দের পরিমাণ এবং প্রকৃত ব্যয় নিরূপণ করছি। এ ছাড়া, সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় গৃহীত প্রকল্পের সুষ্ঠু সমন্বয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফরম গঠন করা হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পিতভাবে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। এ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে এবারের বাজেটে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। বায়ু, পানিদূষণ নিয়ন্ত্রণে দেশের সব শিল্প প্রতিষ্ঠানে দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দেশব্যাপী ২ হাজার ৯০৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ২ হাজার ৪৭৪টি তরল বর্জ্য নির্গমনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইটিপি স্থাপন করা হয়েছে এবং ৬৫৬টি তরল বর্জ্য নির্গমণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে জিরো ডিসচার্জ প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া, ২৭টি নদীর ৯৯টি স্থানে নিয়মিত পানির গুণগতমান মনিটরিং করা হচ্ছে এবং শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে।
বাজেট ঘোষণায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সামাজিক বনায়নসহ দেশব্যাপী বনায়ন কার্যক্রম ও বৃক্ষরোপণের ফলে দেশে মোট বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ দেশের মোট আয়তনের ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ৮টি জাতীয় উদ্যান, ২০টি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, ৪টি ইকোপার্ক, ১টি উদ্ভিদ উদ্যান, ২টি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া (সোয়াচ অব নো-গ্রাউন্ড ও সেন্টমার্টিন) এবং ২টি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকাসহ মোট ৩৭টি সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে সংরক্ষিত এলাকার সংখ্যা মোট ৫৩টি।