বাংলাদেশ ব্যাংক এখন নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সিদ্ধান্তের জন্য ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদকে ডাকে। সকালে সিদ্ধান্ত নেয় বিকেলে পরিবর্তন করে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সমবায় সমিতিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ব্যাংকখাতের সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলেচনায় এসব মন্তব্য করেন তিনি। আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, এবিবির সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমীন, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রমুখ।
ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছে বলেই আজ ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করছে। আমরাও চালিয়েছি এতো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করিনি, এতল সার্কুলার দেয়নি। এখন কেউ খেলাপি হলে তার একটি প্রতিষ্ঠান ঋণ পাবে না তবে অন্যগুলো পাবে এটা কি, আমার বুঝে আসে না। আমরা রিজার্ভ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে ফেলে এখন মাথায় হাত। আমাদের পলিসিটা আগে ঠিক করতে হবে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তিনি বলেন, এখন ব্যবসার মতোই খেলাপি ঋণ মডেলে পরিনত হয়েছে। সুশাসনের অভাবে রাজনৈতিক-ব্যবসায়ীক কারনে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতো খারাপ অবস্থায় আগে কখনও যায়নি। এ অবস্থায় অবশ্যই কঠোর হাতে দমন করতে হবে, সুশাসন আনতে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করতে হবে। টটা নাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যতোই ক্যাশলেস সোসাইটি, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, কলিংপেক দিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি করতে চাই, সেটা কোনভাবেই সম্বভ না।
সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নিয়ন্ত্রণ কতৃপক্ষ মানে শক্তভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন সকালে একরকম নিয়ম করে। বিকালে আবার আরেকজনের কথা শুনে তা পরিবর্তন করে। এসব সিদ্ধান্ত আবার নেন কখনো ব্যবসায়ী- রাজনীতিবিদদের সাথে বসে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন সমবায় সমিতিতে পরিণত হয়েছে। আইনে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন দেওয়া আছে, কিন্তু এখন তার অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তা অর্জন করতে হবে। এখন সুদহার, ডলারের দর অনেক আগে বাড়ানো দরকার ছিল। তা না করায় ভালো করতে গিয়ে মানুষের ওপর চাপ বাড়ছে। শুধু সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, ডলারের দর বাড়িয়ে কিংবা সুদহার বাড়িয়ে প্রবৃদ্ধি হবে না। প্রবৃদ্ধির জন্য ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প, কৃষিতে ঋণ বাড়াতে হবে।