480
ঢাকামঙ্গলবার , ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  1. অনুসন্ধানী ও বিশেষ প্রতিবেদন
  2. অপরাধ-আইন ও আদালত
  3. অর্থ-বাণিজ্য-শিল্প
  4. অর্থ-বাণিজ্য-শিল্প-ব্যাংক-বীমা-নন ব্যাংক
  5. আইটি, টেলিকম ও ই-কমার্স
  6. আবাসন-ভূমি-রাজউক-রিহ্যাব
  7. উদ্যোক্তা-জীবনী
  8. করপোরেট ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
  9. কৃষি, খাদ্য ও পরিবেশ
  10. গণমাধ্যম
  11. গৃহায়ন ও গণপূর্ত
  12. জনশক্তি ও পর্যটন
  13. জনসংযোগ-পদোন্নতি ও সম্মাননা
  14. জাতীয়
  15. দুর্ঘটনা-শোক-দুর্যোগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

 ৪২ বীমা কোম্পানি অতিরিক্ত ব্যয় ৮৩৩ কোটি টাকা

https://www.uddoktabangladesh.com/wp-content/uploads/2024/03/aaaaaa.jpg
উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ডেস্ক:
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫ ১:৩২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

দেশের বীমা কোম্পানিগুলো সময়মতো গ্রাহকের দাবি পরিশোধে ব্যর্থ হলেও খরচের ক্ষেত্রে বিলাসিতার পরিচয় দিচ্ছে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) নির্ধারিত সীমা উপেক্ষা করে ২০২৪ সালে ৪২টি বীমা কোম্পানি অতিরিক্ত ৮৩৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, এ অর্থের বড় অংশই অপচয় বা লোপাট হয়েছে। আইডিআরএর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ২০ জীবনবীমা কোম্পানি ১৫৯ কোটি টাকা এবং ২২ সাধারণ বীমা কোম্পানি ৬৭৪ কোটি টাকা বেশি খরচ করেছে। এসব ব্যয় দেখানো হয়েছে কমিশন প্রদান, উন্নয়ন সভা, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা, বিজ্ঞাপন, দেশ-বিদেশ ভ্রমণ, গাড়ি কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি, আপ্যায়নসহ বিভিন্ন খাতে। অতিরিক্ত খরচের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, যারা ৪৫ কোটি টাকা বেশি খরচ করেছে। দ্বিতীয় স্থানে সরকারি প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা কর্পোরেশন, অতিরিক্ত খরচ ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ ছাড়া নতুন প্রজন্মের প্রতিষ্ঠান সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্স ১৫ কোটি ৭৫ লাখ, এনআরবি ইসলামিক লাইফ ১১ কোটি ৪২ লাখ এবং সানলাইফ ইনস্যুরেন্স ৯ কোটি ৮ লাখ টাকা অনুমোদনহীনভাবে ব্যয় করেছে।

সাধারণ বীমা কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড—নির্ধারিত সীমার বাইরে ১১৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এরপর রয়েছে মার্কেন্টাইল ইসলামী ইনস্যুরেন্স (৯৩ কোটি ৮ লাখ টাকা), বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইনস্যুরেন্স (৯১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা), ইসলামী কমার্শিয়াল ইনস্যুরেন্স (৬৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা) এবং দেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স (৪৩ কোটি ১ লাখ টাকা)।

গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের সিইও জামিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা সরকারনির্ধারিত সীমার বাইরে খরচ করেছি, তবে যা দেখানো হয়েছে সেটাই সঠিক। এর চেয়ে খরচ কমানো অসম্ভব।”

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও কামরুল হাসান বলেন, “আমি সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়েছি। শুনেছি আগে অনিয়ম হয়েছে।”

চার্টার্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সের সাবেক সিইও ও বীমা বিশেষজ্ঞ এস এম জিয়াউল হক বলেন, “ম্যানেজমেন্টের অদক্ষতা ও অদূরদর্শিতার কারণেই এ ধরনের অনিয়ম হচ্ছে।”

অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক মনে করেন, “প্রতিষ্ঠানগুলোতে দক্ষতার ঘাটতি এবং জবাবদিহির অভাব রয়েছে। নিজেদের স্বার্থেই কোম্পানিগুলোকে স্বচ্ছতা আনতে হবে।”

পাইওনিয়ার ইনস্যুরেন্সের সিইও সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান বলেন, “নিয়মিত অডিট থাকলে এ ধরনের অতিরিক্ত ব্যয় হতো না।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম জাহীদ বলেন, “বীমা খাতে তিনটি বড় সংকট দেখা দিয়েছে—নৈতিক বিপর্যয়, তথ্যের ঘাটতি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বলতা। অনেক কোম্পানি অযথা ব্যয় করে গ্রাহকের অর্থ লুট করছে। এর ফলে গ্রাহকের আস্থা ভেঙে পড়ছে।”

বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য ও জেনিথ ইসলামী লাইফের সিইও এ এস এম নূরুজ্জামান বলেন, “গ্রাহকের দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি করলেই খাতের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার সম্ভব। এতে কম খরচে ব্যবসাও বাড়বে।”

আইডিআরএর মুখপাত্র সাইফুন্নাহার সুমি বলেন, “২০২৩ সালে বেশ কয়েকটি কোম্পানিকে জরিমানা করা হয়েছিল। ২০২৪ সালেও যারা সীমা লঙ্ঘন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”