নিজস্ব প্রতিবেদক: গত আগস্ট মাসে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১১টি কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি (বিএটিবিসি), বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, বেক্সিমকো ফার্মা, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক, এমজেএলবিডি, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ওয়ান ব্যাংক, রেকিট বেনকিজার, রেনেটা এবং শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রতিটি কোম্পানির বিদেশি শেয়ার ০.১০ শতাংশের বেশি কমেছে। এদিকে গত আগস্ট মাসে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৬টি কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, এই কোম্পানিগুলো হলো: ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, আইডিএলসি, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ এবং তাল্লু স্পিনিং। এই ৬টি কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ০.১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, যা বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে।
বিনিয়োগ কমা কোম্পানিভিত্তিক চিত্র
- বিএটিবিসি: গত জুলাই মাসে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৩.৭২ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে ছিল, যা আগস্টে কমে ৩.৫৫ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ৩০০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
- বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম: এই কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগ জুলাই মাসের ১.৩৪ শতাংশ থেকে কমে আগস্টে ০.৭৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ০.২৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।
- বেক্সিমকো ফার্মা: বেক্সিমকো ফার্মাতেও বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। জুলাই মাসে ২৭.৫৫ শতাংশ থাকা বিদেশি শেয়ার আগস্টে কমে ২৭.৩৪ শতাংশ হয়েছে। ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ৪০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
- ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক: এই ব্যাংকের বিদেশি বিনিয়োগ জুলাই মাসের ০.৫৯ শতাংশ থেকে কমে ০.৪৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০২৩ অর্থবছরে ৫ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিলেও, ২০২৪ সালে ব্যাংকটি কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি।
- অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ: জুলাই মাসে ৩৩.৯৬ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ ছিল, যা আগস্টে কমে ৩৩.৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কোম্পানিটি ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
- রেনেটা: রেনেটাতে বিদেশি বিনিয়োগ ১৯.৪৩ শতাংশ থেকে কমে ১৮.৯১ শতাংশে নেমেছে। ২০২৪ সালেকোম্পানিটি ৯২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
- শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ: শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজে বিদেশি বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি কমেছে, যেখানে জুলাই মাসের ৫.৭৪ শতাংশ থেকে তা ৪.৭৯ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।
- এমজেএলবিডি, ওয়ান ব্যাংক এবং রেকিট বেনকিজারের মতো অন্যান্য কোম্পানিগুলোতেও বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। এমজেএলবিডি ২০২৪ সালে ৫১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে, ওয়ান ব্যাংক ২০২৪ সালে কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। আর রেকিট বেনকিজার ২০২৪ সালে ৩৩৩০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৬ কোম্পানিতে :
- ব্র্যাক ব্যাংক: এই ব্যাংক বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। জুলাই মাসের ৩৫.৫০ শতাংশ থেকে বিদেশি শেয়ারের পরিমাণ বেড়ে আগস্টে ৩৬.০৬ শতাংশে পৌঁছেছে। সর্বশেষ অর্থবছরে কোম্পানিটি ১২.৫০ শতাংশ ক্যাশ এবং ১২.৫০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
- টি ব্যাংক: সিটি ব্যাংকেও বিদেশি বিনিয়োগ জুলাই মাসের ৬.৬৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬.৭৭ শতাংশ হয়েছে। এই ব্যাংকটিও ১২.৫০ শতাংশ ক্যাশ ও ১২.৫০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
- আইডিএলসি: জুলাইয়ে ১.৫১ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ ছিল, যা আগস্টে বেড়ে ১.৭২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আইডিএলসি ১৫ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
- সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট: জুলাই মাসে ৩.৯৪ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ আগস্টে ৪.০৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কোম্পানিটি সর্বশেষ অর্থবছরে ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
- সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ: এই কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগ জুলাইয়ে ০.০ শতাংশ থেকে আগস্টে ০.১৫ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। সিনোবাংলা ১০ শতাংশ ক্যাশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।
- তাল্লু স্পিনিং: তাল্লু স্পিনিংয়ে বিদেশি বিনিয়োগ জুলাইয়ের ০.২২ শতাংশ থেকে বেড়ে আগস্টে ০.৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কোম্পানিটি ২০১৫ সালের পর আর কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি।