480
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  1. অনুসন্ধানী ও বিশেষ প্রতিবেদন
  2. অপরাধ-আইন ও আদালত
  3. অর্থ-বাণিজ্য-শিল্প
  4. অর্থ-বাণিজ্য-শিল্প-ব্যাংক-বীমা-নন ব্যাংক
  5. আইটি, টেলিকম ও ই-কমার্স
  6. আবাসন-ভূমি-রাজউক-রিহ্যাব
  7. উদ্যোক্তা-জীবনী
  8. করপোরেট ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
  9. কৃষি, খাদ্য ও পরিবেশ
  10. গণমাধ্যম
  11. গৃহায়ন ও গণপূর্ত
  12. জনশক্তি ও পর্যটন
  13. জনসংযোগ-পদোন্নতি ও সম্মাননা
  14. জাতীয়
  15. দুর্ঘটনা-শোক-দুর্যোগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ন্যাশনাল টির ১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা নিয়ে পদ্মা ব্যাংকের টালবাহানা

https://www.uddoktabangladesh.com/wp-content/uploads/2024/03/aaaaaa.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫ ৪:০১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি ন্যাশনাল টি কোম্পানি পদ্মা ব্যাংকে আটকে থাকা ১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা ফেরত পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে। এই অর্থ প্লেসমেন্ট শেয়ার সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু পদ্মা ব্যাংক পুরো টাকা ফেরত না দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সংকটে পড়েছে। এ অবস্থায় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছে।

ন্যাশনাল টি কোম্পানি ঋণ পরিশোধ এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২৭৯ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহের জন্য প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করে। এর প্রথম ধাপের সাবস্ক্রিপশন শেষ হয় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। বিনিয়োগকারীরা পদ্মা ব্যাংকের গুলশান কর্পোরেট শাখায় ৪৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা জমা দেন। তবে ব্যাংকটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে মাত্র ২৫ কোটি টাকা পরিশোধ করে বাকিটা ফেরত দেয়নি।

অর্থ ফেরত না পাওয়ায় ন্যাশনাল টি কোম্পানি ২০ আগস্ট বিএসইসির কাছে সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দেয়। বিএসইসি বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরে এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানায়। চিঠিতে উল্লেখ থাকে, শেয়ার সাবস্ক্রিপশনের অর্থ পূবালী ব্যাংকে স্থানান্তরের নির্দেশ থাকলেও পদ্মা ব্যাংক তা করেনি, যার কারণে অর্থ আটকা পড়ে গেছে।

পদ্মা ব্যাংকের সিইও কাজী মো. তালহা বলেন, ব্যাংকে বর্তমানে কিছু আর্থিক সমস্যা চলছে। তারা কিছু টাকা পরিশোধ করেছে, বাকিটা ধাপে ধাপে দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ব্যাংকের তারল্য সংকট গুরুতর, এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় সমস্যা বাড়ছে। তিনি জানান, ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে জমা টাকা খরচ হয়েছে তারল্যের সংকট মেটাতে।

পদ্মা ব্যাংক মারাত্মক তারল্য সংকটে ভুগছে। ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানায়, নতুন কোনো আমানত আসছে না, বরং গ্রাহকরা তাদের আমানত তুলে নিচ্ছে। ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ের ওপর নির্ভরশীল। মার্জারের আলোচনা শুরু হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। সরকারের পরিবর্তনের পর নতুন আমানত আসা বন্ধ, আর গ্রাহকরা বড় অঙ্কের টাকা তুলে নেওয়ায় ব্যাংকের অবস্থা সংকটময়।

২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, পদ্মা ব্যাংকের স্থূল খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫,১০৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯০.৫৫ শতাংশ। ব্যাংকের মোট ঋণ ছিল ৫,৬৪১ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকের সমন্বিত লোকসান দাঁড়িয়েছে ৫,৩৪৯ কোটি টাকা।

পদ্মা ব্যাংকে প্রায় ৪৩টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট আমানত রয়েছে প্রায় ২,০০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট একাই রেখেছে ৮৯৯ কোটি টাকা। এছাড়া আইসিবি, সাধারণ বীমা করপোরেশন, জীবন বীমা করপোরেশন, তিতাস গ্যাস, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আমানত রয়েছে। সরকারি আমানত রক্ষায় অর্থ মন্ত্রণালয় পদ্মা ব্যাংককে পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ দিতে নির্দেশ দিয়েছে।

ন্যাশনাল টি কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত না পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সংকটে পড়েছে। একই সময়ে পদ্মা ব্যাংকের তারল্য সংকট ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকের অবস্থা ক্রমেই সংকটময় হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন যাতে বিনিয়োগকারীদের টাকা সুরক্ষিত থাকে এবং ব্যাংকের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।