বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, কোনো ব্যাংকের মূলধন যদি ১০ শতাংশের নিচে নামে এবং প্রভিশন ঘাটতি থাকে, তাহলে সেই ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড (মুনাফা) দেওয়া যাবে না। একই সঙ্গে, এসব ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাকেও বোনাস দেওয়া হবে না।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ; আসন্ন নির্বাচন, প্রবাসীদের অংশগ্রহণ, আগামীর অর্থনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গভর্নর এ কথা জানান। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশ (সিএনআরবি)।
গভর্নর বলেন, “গত কয়েক বছর অর্থ ব্যবস্থায় এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছিল। এখন আমরা সেটি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি এবং অনেকটাই সফল হয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে কাজ করছে।”
তিনি জানান, বর্তমানে দেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টে উদ্বৃত্ত রয়েছে। এর পেছনে মূল কারণ রেমিট্যান্স প্রবাহে ২১ শতাংশ বৃদ্ধি এবং রপ্তানির ইতিবাচক প্রবণতা।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “হুন্ডি কমে এসেছে। আগে প্রবাসী আয়ের ৩০ শতাংশ লিকেজ হতো। এখন সেটা অনেকটাই বন্ধ হয়েছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। সুশাসনের কারণে পাচারও কমেছে।”
ঋণখেলাপি বিষয়ে তিনি বলেন, “জুনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঋণখেলাপির হার ৩০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজন্য পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। এতে আমানতকারী ও কর্মকর্তাদের জন্যও নিরাপদ ও ভালো সমাধান আসবে।”
তিনি আরও জানান, দেশে এখন ডলার সংকট নেই, বরং টাকার সংকট রয়েছে। মূল্যস্ফীতিও চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
“আগস্টে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তবে আমাদের লক্ষ্য এটিকে ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা। মূল্যস্ফীতির বিষয়টি রাতারাতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, এতে সময় লাগে।”
গভর্নর আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালার মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে বাংলাদেশ সফল হবে।