সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছেড়েছেন। রোববার সকালের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
ইমিগ্রেশন পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। শেখ হাসিনার শাসন আমলে আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন খাতে অত্যন্ত প্রভাবশালী নাম ছিল শেখ কবির। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন ২৩টি প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও সংস্থার শীর্ষপর্যায়ের নানা পদে ছিলেন শেখ কবির।
শেখ কবিরের দেশ ত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ডিআইজি (ইমিগ্রেশন) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রোববার সকালে একটি ফ্লাইটে তিনি দেশের বাইরে গেছেন। তাঁর বিদেশযাত্রায় কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল কি না জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
২০১১ সাল থেকে বিমা কোম্পানির মালিকদের সমিতি বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) একটানা সভাপতি ছিলেন শেখ কবির হোসেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে শেখ হাসিনার চাচা হিসেবে শেখ কবিরের পরিচিতির কারণে দুই বছর মেয়াদি বিআইএর কমিটির কোনো স্বাভাবিক নির্বাচন হতো না।
শেখ কবির হোসেন: বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং সোনালী ব্যাংকে কাজ করেছেন। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর তিনি সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন ফাউন্ডেশন, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারপারসন ছিলেন। তিনি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন। তিনি ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারপারসন। জুলাই 2005-এ, তিনি হংকং-এর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ লায়ন্স ক্লাবের দুই বছরের মেয়াদের জন্য পরিচালক নির্বাচিত হন। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮ হোসেন টুঙ্গিপাড়া অ্যাসোসিয়েশনের একটি সভায় সভাপতিত্ব করেন যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। ১৫ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে, হোসেন বাংলাদেশ বীমা সমিতির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি চ্যানেল ২৪-এর একজন পরিচালক এবং আগস্ট ২০১১ সালে এটির টেস্ট ট্রান্সমিশন চালু করেন।
হোসেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, যা বাংলাদেশের বীমা কোম্পানিগুলির একটি ব্যবসায়ী সমিতি। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে তাদের অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে ধর্মঘট না করার জন্য বলেন। তিনি ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং অলাভজনক HELP (স্থানীয় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য স্বাস্থ্য ও শিক্ষা) এর চেয়ারপারসন। তিনি কাবিকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি মাসুদা ডেইরি নিউট্রিশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও। 2013 সালে, তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক স্টক মার্কেটে সমস্যা তদন্তের জন্য গঠিত একটি প্যানেলের অংশ ছিলেন।
হোসেন বাংলাদেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অফ বাংলাদেশের চেয়ারপারসন। ২০১৭ সালে তিনি পুনরায় সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারপারসন। তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক। তিনি দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়নের জন্য বঙ্গবন্ধু একাডেমির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। হোসেন ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারপারসন পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে হোসেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ২০১১ সাল থেকে সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য।
ব্যক্তিগত জীবন : হোসেন মাসুদা কবিরের সাথে বিবাহিত এবং একসাথে তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: জোনায়েদ মানসুর, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৫৬ পুরানা পল্টন, ঢাকা -১০০০। রেজিস্টার্ড : ২৯২ ভূইয়া পাড়া প্রধান সড়ক, খিলগাঁও, ঢাকা- ১২১৯। সম্পাদকীয়: ০১৭৮৯৪২১৪৪৪, বার্তাকক্ষ : ০১৯১৩৫৫৫৩৭১। ই-মেইল: inextpr@gmail.com , (বিজ্ঞাপন), newsuddokta@gmail.com (বার্তাকক্ষ)