টিএনজেড, মাহমুদ ডেনিম, স্টাইল ক্র্যাফট, ডার্ড গ্রুপ, জেনারেশন নেক্সট ও রোয়ার ফ্যাশন- এই ছয়টি পোশাক কারখানা ব্যর্থ
এখনো রোজার ঈদের বেতন বোনাস না দেয়া ছয়টি তৈরি পোশাক কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তবে ৭ মে পর্যন্ত সময় পাবে কারখানাগুলো।
২৩ এপ্রিল, বুধবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে শ্রম অসন্তোষ নিরসন বিষয়ে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে চেষ্টা করা হবে।
রোজার ঈদের আগেই দেশের সব শিল্প কারখানার কর্মীদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হচ্ছে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন শ্রম উপদেষ্টা নিজেই। প্রয়োজনে তাদের সম্পদও বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো ছয়টি তৈরি পোশাক কারখানার কর্মীরা বেতন বোনাস পাননি।
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই গত বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে বৈঠক করেন শ্রম এবং বাণিজ্য উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনো অর্থ দেয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। বেতন-ভাতা পরিশোধে সময় বেধে দেয়া হয় ৭ মে পর্যন্ত।
কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে কমিটি গঠন করা হবে: শ্রম উপদেষ্টাকমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে কমিটি গঠন করা হবে: শ্রম উপদেষ্টা
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গত বুধবার আমরা স্পেসিফিক ছয়টি পোশাক কারখানা নিয়ে আলোচনা করেছি। যারা ডিফল্টার (বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ) হয়েছে এবং প্রতিজ্ঞা করেছে যে, শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবে। কোথা থেকে পরিশোধ করবে সে প্রশ্নটি নিয়ে এসেছেন। আমরা বলেছি সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আর কোনো টাকা দেবো না। তারা কীভাবে দেবেন সে সিদ্ধান্ত তারা নেবেন।
তিনি বলেন, অনেক কারখানার মালিক নেই। কেউ বলেন আইসিইউতে, আছে বিদেশে। আবার কেউ বলে, কোথায় আছে কেউ জানে না। আমরা প্রত্যেকের নামে রেড অ্যালার্ট জারি করার জন্য আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানাচ্ছি।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, টিএনজেড, মাহমুদ ডেনিম, স্টাইল ক্র্যাফট, ডার্ড গ্রুপ, জেনারেশন নেক্সট ও রোয়ার ফ্যাশন- এই ছয়টি পোশাক কারখানা পরিষদে ব্যর্থ হয়েছে। ঈদের আগ পর্যন্ত এসব কারখানা ঘিরেই অসন্তোষ ছিল। বেশিরভাগ মালিকই পলাতক। মালিক, মালিকের বউ, মালিকের ছেলে, কেউ নেই।
সাখাওয়াত হোসেন আরও যোগ করেন, আমরা সেজন্য রেড অ্যালার্ট দেওয়ার কথা বলেছি। কাল-পরশুর মধ্যে আপনারা জানবেন কার কার নামে রেড অ্যালার্টের জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২৮ এপ্রিল এসব ফ্যাক্টরি ও ব্যাংকের সঙ্গে বসে দেখতে হবে, তাদের কী দায়-দেনা আছে। দায় থেকে যদি সম্পদ বেশি থাকে, সেখান থেকে তারা টাকা দিতে পারে কি না, যদি না দিতে পারে সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা হবে, সেটা নিয়ে আলোচনা হবে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয় ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে।
তিনি বলেন, তারা (পোশাক কারখানা) প্রতিজ্ঞা করেছেন। কেউ বলেছেন ৭ মের মধ্যে দেবেন (পাওনা পরিশোধ), কেউ বলেছেন ৮ মে'র মধ্যে দেবেন। এই টাকাটা তাদের পরিশোধ করতে হবে। কোথা থেকে পরিশোধ করবেন- যদি সম্পদ বিক্রি করে করা যায়, করা যাবে কি না আমার সন্দেহ আছে। কিংবা বাড়িঘর বিক্রি করে।
মালিক দেশে নেই, যার সঙ্গে যোগাযোগ আছে তার মাধ্যমে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে আসার জন্য বলা হবে, এগুলো বিক্রি করার জন্য। বসে দেখতে হবে ব্যাংক যে স্টেটমেন্ট দিচ্ছে এবং উনারা (পোশাক কারখানা) যে স্টেটমেন্ট দিচ্ছে, সেটা ঠিক আছে কি না।
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য না, আবার মিথ্যা সেটাও না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসীমান্তের সব ভিডিও সত্য না, আবার মিথ্যা সেটাও না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
কয়েকটি ব্যাংক অতিরিক্ত ঋণ দিয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এটা তারা কীভাবে করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ের তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। পরবর্তী সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি আসবেন, তার কাছে আমরা জানতে চাইবো আদৌ তদন্ত হয়েছে কি না। হলে কী হয়েছে, কত দূর গিয়েছে।
শ্রম উপদেষ্টা আরও বলেন, 'আমরা কিছু কিছু নাম পেয়েছি। ওই সব ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য, সেগুলো নিয়ে বসবেন আলোচনা হবে। ডেডলাইন দেওয়া হবে, ওই সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। যারা ডিফল্টার তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন সাজেস্ট করা হবে।
এর আগে, গত বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন শ্রম উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেন কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। এ সময় শ্রম উপদেষ্টা বলেন, কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে আশাবাদী তিনি।
কমিশন প্রধান সৈয়দ সুলতার উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের ৮৫ ভাগ শ্রমিক আইনি সুরক্ষার বাইরে। তাদের সামাজিক নিরাপত্তা নেই। সব শ্রমিককে ন্যূনতম আইনি সুরক্ষায় মধ্যে আনতে হবে
সম্পাদক ও প্রকাশক: জোনায়েদ মানসুর, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৫৬ পুরানা পল্টন, ঢাকা -১০০০। রেজিস্টার্ড : ২৯২ ভূইয়া পাড়া প্রধান সড়ক, খিলগাঁও, ঢাকা- ১২১৯। সম্পাদকীয়: ০১৭৮৯৪২১৪৪৪, বার্তাকক্ষ : ০১৯১৩৫৫৫৩৭১। ই-মেইল: inextpr@gmail.com , (বিজ্ঞাপন), newsuddokta@gmail.com (বার্তাকক্ষ)