480
ঢাকারবিবার , ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  1. অনুসন্ধানী ও বিশেষ প্রতিবেদন
  2. অপরাধ-আইন ও আদালত
  3. অর্থ-বাণিজ্য-শিল্প
  4. অর্থ-বাণিজ্য-শিল্প-ব্যাংক-বীমা-নন ব্যাংক
  5. আইটি, টেলিকম ও ই-কমার্স
  6. আবাসন-ভূমি-রাজউক-রিহ্যাব
  7. উদ্যোক্তা-জীবনী
  8. করপোরেট ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
  9. কৃষি, খাদ্য ও পরিবেশ
  10. গণমাধ্যম
  11. গৃহায়ন ও গণপূর্ত
  12. জনশক্তি ও পর্যটন
  13. জনসংযোগ-পদোন্নতি ও সম্মাননা
  14. জাতীয়
  15. দুর্ঘটনা-শোক-দুর্যোগ

৩ মাসে কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব কমেছে এক হাজার ৬৫৭

https://www.uddoktabangladesh.com/wp-content/uploads/2024/03/aaaaaa.jpg
উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ডেস্ক
ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪ ১:০৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর ৩ মাসে কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৬৫৭। একই সময় কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব থেকে ২৬ হাজার ১৮৭ কোটি টাকার আমানত তুলে নিয়েছেন গ্রাহকরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরভিত্তিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময় দেশে একটা অস্থিরতা ছিল। আগের সরকারের কয়েকটি ব্যাংকের দুর্বলতা প্রকট আকার ধারণ করলেও এতদিন সেটা প্রকাশ করা হয়নি। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা প্রকাশ করায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছিল। তাই এসব ব্যাংকের গ্রাহকরা আতঙ্কে আমানত তুলে নিয়েছে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু ব্যাংকে দেউলিয়া হয়ে গেছে মন্তব্য করায় একটা প্রভাব পড়েছে। তবে ভালো ব্যাংকগুলোয় আমানত আবার জমা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছেÑএমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা রয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ১২৭। কোটি টাকার ওপর এসব ব্যাংক হিসাবে মোট জমা আছে ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা।
এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক এপ্রিল-জুনে ১ কোটি টাকার বেশি আমানতের ব্যাংক হিসাব ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টি। ওই প্রান্তিকে এসব ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা।

অর্থাৎ ৩ মাসের ব্যবধানে কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৬৫৭। একই সময় এসব হিসাবের বিপরীতে জমা টাকার পরিমাণ কমেছে ২৬ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা। এর আগে কোটি টাকার হিসাব থেকে এত পরিমাণ টাকা কখনও কমেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, কোটি টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক। এর আগে এসব কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট ও আমানত কমেছে। তবে এবার বেশি কমার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের আতঙ্ক কাজ করতে পারে।

তবে কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি নাগরিকদের হিসাব নয়। কেননা, অনেক ব্যক্তিই যেমন ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখেন, তেমনি অনেক প্রতিষ্ঠানও তা করে। অর্থাৎ কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব বলতে যুগপৎ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উভয়ের কথাই বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তারও কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে। দেশে প্রকৃত কোটিপতির সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না। ফলে কত মানুষের কোটি টাকা রয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান মেলে না। তবে ব্যাংকে কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা থেকে একটা ধারণা পাওয়া যায়। কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা কভিড মহামারির পর থেকে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭৫ সালে কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব ছিল মাত্র ৪৭টি, যা ২০১৫ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ হাজার ৫১৬টি। করোনা মহামারির শুরুতে- ২০২০ সালের মার্চে এই সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫, যা বর্তমানে ১ লাখ ১৭ হাজারে উন্নীত হয়েছে।

এদিকে ব্যাংক খাতে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে সামগ্রিকভাবে আমানতও কমেছে। তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা। গত জুন শেষে ছিল ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা। তিন মাসে আমানত কমেছে ১৩ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। এই তিন মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ও ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোয় সবচেয়ে বেশি আমানত কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আমানত কমেছে ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর কমেছে ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ। একই সময় বিদেশি ব্যাংকগুলোর আমানত বেড়েছে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ।

ব্যাংকাররা জানান, ইসলামী ধারার কিছু ব্যাংক এতদিন এস আলমের দখলে ছিল। এসব ব্যাংক থেকে গ্রুপটি নামে-বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। যদিও আগের সরকারের আমলে ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি খারাপ হওয়া সত্ত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সহায়তা করেছে। নতুন গভর্নর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগদান করে অনৈতিক সুবিধা বন্ধ করে দেয়। এতে ব্যাংকগুলোর ক্ষত সামনে বেরিয়ে আসে। এ সময় গ্রাহকরা ব্যাংকগুলো থেকে আতঙ্কে টাকা তুলে নেয়। ফলে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর আমানত কমার এই চিত্র দেখা যায়।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব ব্যাংকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে, সেসব ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন গ্রাহকরা। তবে এসব টাকা ঘুরেফিরে আবার ভালো ব্যাংকে আসছে। কারণ কোটি টাকার আমানত নিয়ে কেউ ঘরে রাখে না। তাই বলা যায় এসব ভালো ব্যাংকেই আবার ফেরত আসবে।