480
ঢাকামঙ্গলবার , ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  1. অনুসন্ধানী ও বিশেষ প্রতিবেদন
  2. অপরাধ-আইন ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি, টেলিকম ও ই-কমার্স
  5. আবাসন-ভূমি-রাজউক-রিহ্যাব
  6. উদ্যোক্তা
  7. করপোরেট ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
  8. কৃষি, খাদ্য ও পরিবেশ
  9. গণমাধ্যম
  10. গৃহায়ন ও গণপূর্ত
  11. জনশক্তি ও পর্যটন
  12. জনসংযোগ-পদোন্নতি ও সম্মাননা
  13. জাতীয়
  14. ডিএস‌ই- সিএস‌ই-বিএস‌ইসি
  15. নগরজীবন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শিল্পপতি মোহাম্মদ নুর আলীর উদ্যোক্তার হওয়ার গল্প

https://www.uddoktabangladesh.com/wp-content/uploads/2024/03/aaaaaa.jpg
উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ডেস্ক
নভেম্বর ১৯, ২০২৪ ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

শিল্পপতি মোহাম্মদ নুর আলীর বাংলাদেশের কর্পোরেট জগতের অন্যতম উজ্জ্বল নাম। মুক্তিযোদ্ধা থেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার যে দীর্ঘ যাত্রা তিনি পাড়ি দিয়েছেন, তা যে কোনো তরুণ উদ্যোক্তার জন্য এক বিরাট অনুপ্রেরণার উৎস। তার কর্মজীবনের প্রতিটি অধ্যায়ই সাফল্য, চ্যালেঞ্জ, এবং মানবসেবার মিশ্রণে সমৃদ্ধ। মোহাম্মদ নূর আলী দেশের একজন বিশিষ্ট উদ্যোক্তা যিনি রিয়েল এস্টেট, হসপিটালিটি এবং ট্যুরিজম সেক্টর, সিরামিক শিল্প, পাওয়ার প্লান্ট, জনশক্তি রপ্তানি, ব্যাংকিং , হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট, ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং আরও অনেক কিছুর জনক। তিনি ইউনিক গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড, বুর্স পাওয়ার প্ল্যান্ট এর চেয়ারম্যান।  নুর আলী একমাত্র বাংলাদেশী উদ্যোক্তা যিনি বেসরকারী খাতে একটি ফাইভ ষ্টার হোটেল (দ্য ওয়েস্টিন ঢাকা) স্থাপনের পথপ্রদর্শক। ওয়েস্টিন ঢাকা এমনিতেই দেশি-বিদেশি কমিউনিটির কাছে বেশ জনপ্রিয়। ১২ বছরের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে, ওয়েস্টিন ঢাকা জনাব নুর আলীর সক্ষম নেতৃত্বে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে।
নুর আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৫৩ সালে ঢাকা জেলার অন্তর্গত নবাবগঞ্জে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জনাব আলী ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা) এর সভাপতি এবং ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সদস্য ছিলেন। নুর আলী অনেক সামাজিক ও জনহিতকর কাজের সাথে জড়িত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি বিভিন্ন বাণিজ্য সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। তিনি গুলশান ক্লাব লিমিটেড, বোট ক্লাব লিমিটেড, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট এর আজীবন সদস্য। তিনি একজন বহুল ভ্রমণকারী ব্যক্তি এবং তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, কানাডা, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়া, লিবিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ভারত সফর করেছেন। তিনি দেশ-বিদেশের বহু সেমিনারে অংশ নেন।

সংগ্রামী শুরু থেকে উত্থান: শৈশব থেকেই সংগ্রামের মধ্যে বেড়ে ওঠা মোহাম্মদ নুর আলী কোনো উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন না। কৃষিকাজ করে পড়ালেখার খরচ চালানোর সেই দিনগুলোর অভিজ্ঞতা তাকে কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা এবং ঝুঁকি নেওয়ার সাহস দিয়েছিল।
১৯৭১ সালে, বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে অংশ নেন। যুদ্ধশেষে তিনি শুধু একজন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাই নন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রদূত হিসেবেও ভূমিকা রাখতে প্রতিজ্ঞ হন।

উদ্যোক্তা হিসেবে পথচলা : ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউনিক গ্রুপ মোহাম্মদ নুর আলীর নেতৃত্বে শ্রম রপ্তানি দিয়ে ব্যবসার যাত্রা শুরু করে। আজ এই গ্রুপটি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। তাদের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বৈচিত্র্যময় সেক্টর যেমন ট্রাভেল, সিরামিকস, ফ্রেইট ম্যানেজমেন্ট, এবং আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ব্যবসা।
দ্য ওয়েস্টিন ঢাকা: ২০০০ সালে চালু করা এই পাঁচ তারকা হোটেলটি বাংলাদেশের আতিথেয়তা শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
মেঘনাঘাট পাওয়ার প্ল্যান্ট: ৫৮৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক অঞ্চল: নারায়ণগঞ্জে তার অর্থনৈতিক অঞ্চল দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে নতুন দিগন্তে নিয়ে গেছে।
সামাজিক দায়বদ্ধতা: তার মালিকানাধীন নুর আলী ফ্যামিলি ট্রাস্ট সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এই ট্রাস্ট থেকে পরিচালিত হয় মসজিদ, মাদ্রাসা এবং অসংখ্য দাতব্য সংস্থা। এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে তিনি মানবতার সেবায় নিবেদিত থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উন্নততর সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন দেখছেন।

ঝুঁকি নেওয়া এবং সাফল্য: ব্যবসায়িক ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতাই তাকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় মহেশখালীতে স্টিল প্ল্যান্ট এবং দ্য ওয়েস্টিনের মতো হোটেল নির্মাণের উদ্যোগগুলো তার উদ্ভাবনী মনোভাবের সাক্ষী।

তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা: তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ই শিক্ষা দেয় যে কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য, এবং ঝুঁকি নেওয়ার সাহস থাকলে শূন্য থেকে সাফল্যের শীর্ষে ওঠা সম্ভব।
মোহাম্মদ নুর আলীর জীবনের গল্প কেবল একজন সফল উদ্যোক্তার নয়, বরং একজন দেশপ্রেমিক, সমাজসেবক, এবং মানবতার সেবায় নিবেদিত ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি। তার অর্জন বাংলাদেশের অর্থনীতি, সমাজ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অবিনশ্বর উদাহরণ।