অবশেষে আড়াল থেকে বের হয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকী। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আত্মগোপনে থাকার পর বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) তারা জনসমক্ষে আসেন বলে জানা গেছে। ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় তারা আজ অফিস করেছেন।
কোরবানির ঈদের আগে ১২ লাখ টাকায় মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত একটি ছাগল বুকিং দিলে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয়। তাতে মতিউরের দুই বিয়ে, জৌলুসময় জীবন, জমি, ফ্ল্যাট, রিসোর্ট, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ মিলিয়ে হাজার কোটি টাকার সম্পদের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার শুরুর দিকে একটি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষতকারে মতিউর আপন সন্তান ইফাতকে অস্বীকার করে আরও বেশি ফেঁসে যান। গণমাধ্যমের খবরে প্রমাণিত হয় ইফাত মতিউরেরই সন্তান। সব মিলিয়ে এক নাজুক পরিবেশ সৃষ্টি হলে আত্মগোপনে চলে যান মতিউর রহমান ও তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকী। আর দ্বিতীয় স্ত্রী তার সন্তানদের নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। এর মধ্যে মতিউরকে এনবিআর থেকে সরিয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীন সম্পদ বিভাগে যুক্ত করা হয়।
ঈদের পর বেশ কয়েকটি কর্মদিবস গেলেও মতিউর তার নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি। অন্যদিকে তার প্রথম স্ত্রী ও নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকীও তার অফিসে আসেননি। তারা দু’জন তখন কোথায় অবস্থান করছিলেন তা কেউ বলতে পারছিল না। তাদের এতদিন ধরে ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারগুলোও বন্ধ ছিল। এরই মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে মতিউর আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারত পালিয়ে গেছেন। তবে আজ এসব গুজবের অবসান ঘটে।
নতুন কর্মস্থলে মতিউর: ঈদের ছুটির পর প্রথমবারের মত মতিউর রহমান আজ নিজের নতুন কর্মস্থলে এসেছিলেন বলে জানিয়েছে সময় টেলিভিশন। টেলিভিশনটির রিপোটে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়ে এখনও তার জন্য কোনো কক্ষ কিংবা টেবিল বরাদ্দ হয়নি। ফলে তিনি অল্পসময় অফিসে থেকে চলে যান।
রিপোর্ট অনুসারে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে যোগদানের চিঠিও দিয়েছেন তিনি। জানা গেছে, ই-মেইলে যোগদানের চিঠি দিয়েছেন তিনি।
অফিস করেছেন লায়লা কানিজ: বৃহস্পতিবার নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে অফিস করেছেন তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ। ডেইলি স্টারের এক রিপোর্ট অনুসারে, আজ দুপুর ১২টার দিকে কালো রঙের একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে উপজেলা পরিষদে আসেন লাকী। পরে তিনি আসন্ন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রস্ততি সভায় যোগ দেন। এ সময় সেখানে রায়পুরা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
লাকী আজ দুটি প্রস্তুতি সভায় যোগ দেন। সভা শেষে তিনি নিজ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সভা শেষে সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রশ্ন করলে আরেকটি সভা আছে বলে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি। এমনকি আজও তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।