'আসন্ন বাজেট খুবই টাইট হবে।' গত পাঁচ বছরে প্রতি বছর বাজেট বৃদ্ধির হার ছিল গড়ে ১১ শতাংশ। আগামী বাজেট চলতি বছরের তুলনায় মাত্র ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি হতে পারে। বৃহস্পতিবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। চলতি অর্থবছরের বাজেট আগের বছরের তুলনায় ১২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। এমনকি মহামারি চলাকালীনও আগের বছরের চেয়ে বাজেট বেড়েছিল প্রায় ৯ শতাংশ। দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই প্রথমবারের মতো বাজেট পেশ করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশের বেশি ছিল। কিন্তু, আগামী অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সরকার মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে একটি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে—৬ দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ, গত বছরের মার্চ থেকে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ৯ শতাংশের বেশি। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেট উত্থাপন হতে যাচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিকাল ৩টায় সংসদে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন। এটি তার প্রথম বাজেট ঘোষণা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট।
আসন্ন বাজেটে সরকার বাজেট ঘাটতি ধরতে পারে জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ, যা সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল এক দশক আগে। এবার বাজেট ঘাটতি হতে পারে ২ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি মেটাতে সরকারের বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই খাত থেকে ১ লাখ কোটি টাকা বাজেট ঘাটতি মেটানো হতে পারে। বাকি ১ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি মেটানো হবে ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে।আগামী অর্থবছরে সর্বোচ্চ ব্যয় হবে সুদ পরিশোধে ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা, ভর্তুকি ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন ও পেনশন ১ লাখ কোটি টাকা। রাজস্ব সংগ্রহে ৫ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারে সরকার, যা আগের বছরের তুলনায় আট শতাংশ বেশি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এবারের বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত সম্পদের বৈধতা নেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এবারের বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম করা হয়েছে 'সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার'। সাধারণত বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হয়। আগামী ৩০ জুন বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য করছাড় সুবিধা পেতে পারে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্র।
আসন্ন বাজেট পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সম্প্রতি অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রপ্তানিপণ্যের বৈচিত্র্যকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রান্তিক মানুষের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি এবারের বাজেটে অগ্রাধিকারে থাকবে।
বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অগ্রাধিকার পাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব খাত দীর্ঘদিন কর অবকাশ সুবিধা পেয়ে আসছে, সেসব খাত থেকে এবারে কর অব্যাহতির সুবিধা উঠিয়ে দেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছিল, সে লক্ষ্য পূরণকে সর্বাগ্রে জোর দেয়া হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
অর্থ মন্ত্রণালয় আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে (www.mof.gov.bd) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবাসইটে (www.nbr.gov.bd) এ বাজেটের সব তথ্যা ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পড়তে পারবেন এবং ডাউনলোডও করা যাবে। এছাড়া দেশ ও দেশের বাইরে থেকে budgetfeedback@finance.gov.bd –এ ইমেলের মাধ্যমে বাজেট সম্পর্কে মতামত ও সুপারিশ পাঠাতে পারবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: জোনায়েদ মানসুর, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৫৬ পুরানা পল্টন, ঢাকা -১০০০। রেজিস্টার্ড : ২৯২ ভূইয়া পাড়া প্রধান সড়ক, খিলগাঁও, ঢাকা- ১২১৯। সম্পাদকীয়: ০১৭৮৯৪২১৪৪৪, বার্তাকক্ষ : ০১৯১৩৫৫৫৩৭১। ই-মেইল: inextpr@gmail.com , (বিজ্ঞাপন), newsuddokta@gmail.com (বার্তাকক্ষ)