২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৪৮৬
কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেছে অর্থনীতি
সমিতি। যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ১ দশমিক ৫৭ গুণ বড়
১৯৭২-৭৩ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত ৫০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। গত সোমবার রাজধানীতে বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আইনুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত কালো টাকার আনুমানিক পরিমাণ হবে ১ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আসন্ন বাজেটে মাত্র ০.৯৮ শতাংশ উদ্ধারের সুপারিশ করছি।
এ ছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেছে অর্থনীতি সমিতি। যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ১ দশমিক ৫৭ গুণ বড়। এদিকে আগামী ৬ জুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন করতে পারেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সমিতির অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৪-২৫ : উন্নত বাংলাদেশ অভিমুখী বাজেট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন সমিতির সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ এবং সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত উপস্থিত ছিলেন।
কালো টাকা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘উদ্ধারে রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার। অর্থনীতিকে পরিচালিত করে রাজনীতি। সঠিক লাইনে ব্যবস্থা নিলে পদ্ধতি আছে। ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম অন্যতম। এটা শতভাগ করতে পারলে কালো টাকার অবস্থান বের করা সম্ভব।’
ড. আবুল বারকাত যোগ করে বলেন, ‘কালো টাকা বহু জায়গায় অবস্থান করছে। অর্থ মন্ত্রণালয় একটি গবেষণা করেছিল, যা প্রকাশ হয়নি। সেখানে বলা হয়েছিল বাংলাদেশে কালো টাকার পরিমাণ জিডিপির ৩৩ থেকে ৬৬ শতাংশ হতে পারে। অর্থনীতি সমিতির হিসাবে প্রতি বছরে গড়ে ৩৩ শতাংশের মতো কালো টাকার হিসাব দিয়েছে।’
অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবে আয়ের উৎস সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেটের মধ্যে আয়ের মধ্যে মুনাফা ও মূলধনের ওপর ২ লাখ ৬০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, সম্পদ কর ২ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা, অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর ৭৫ হাজার ২০০ কোটি, বিলাসদ্রব্যে আমদানি শুল্ক ৮৫ হাজার, মাদক শুল্ক ৫ হাজার ২০০ কোটি, কালো টাকা থেকে প্রাপ্তি ১০ হাজার কোটি ও অর্থ পাচার উদ্ধার থেকে প্রাপ্তি ৫ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে বিকল্প বাজেটে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৪৯৬ কোটি আর রাজস্ব আয় হয়েছে ১০ লাখ ২৪ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা।
বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ঘোষিত বাজেট সম্প্রসারণশীল বাজেট। যেখানে সুপারিশ সংখ্যা ছিল ৩৬১টি। এখানে ২৪টি মূল পয়েন্টের উপস্থাপন করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বৈষম্য ও অসমতা দারিদ্র্য নিরসন, সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তাবেষ্টনী, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ ও সঞ্চয়, রেমিট্যান্স, পুঁজিবাজার, ব্যাংক, বৈদেশিক খাত, রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ, সরকারি ঋণ, কৃষিভূমি, ভূমি মামলা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রতিবন্ধী মানুষ, প্রকৃতি ও সরকারি অর্থের সংস্থান প্রভৃতি।
বিকল্প বাজেট সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও কনফারেন্সে দেশের ৬৪টি জেলা, ১৩৫টি উপজেলা এবং ৪৫টি ইউনিয়ন হতে সমিতির সদস্য এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি যুক্ত রয়েছেন। এর আগে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ২০ লাখ ৯৪ হাজার ১১২ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেছিল বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: জোনায়েদ মানসুর, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৫৬ পুরানা পল্টন, ঢাকা -১০০০। রেজিস্টার্ড : ২৯২ ভূইয়া পাড়া প্রধান সড়ক, খিলগাঁও, ঢাকা- ১২১৯। সম্পাদকীয়: ০১৭৮৯৪২১৪৪৪, বার্তাকক্ষ : ০১৯১৩৫৫৫৩৭১। ই-মেইল: inextpr@gmail.com , (বিজ্ঞাপন), newsuddokta@gmail.com (বার্তাকক্ষ)