আরটিএ, পিটিএ, এফটিএ ও ডব্লিউটিও বিষয়ক
এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা;
সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। এলডিসি গ্রাজুয়েশন ফলে একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক বাজারে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের অধিকার হারাবে তেমনি প্রতিযোগী দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে উৎড়াতে হবে নানা চ্যালেঞ্জ। এই অবস্থায় এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন থেকেই নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারিত করতে ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন, দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি বলেও মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এসব চুক্তির সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে নিজেদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানোর প্রতিও গুরুত্বারোপ করেছেন তারা। এ লক্ষ্যে সরকার ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রোববার (মে ২০) সকালে এফবিসিসিআই’র ‘আরটিএ, পিটিএ, এফটিএ ও ডব্লিউটিও’ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সরকার দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করছে। তবে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর প্রতিযোগী দেশগুলোর সাথে টিকে থাকতে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, চামড়া, হস্তশিল্প, চা, পাট ইত্যাদি খাতে আরও বৈচিত্র্যকরণ আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। একইসাথে ব্যবসায়ীদের হয়রানি কমাতে কাস্টমস, বন্দর ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর অটোমেশন জরুরি বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ প্রস্তুতি নিয়েই বাণিজ্য চুক্তিগুলো করছে। আমাদেরও এসব চুক্তির আগে প্রস্তুতি নিতে হবে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকার মতো সক্ষমতা অর্জন না করলে স্থানীয় বাজার হারানোরও আশঙ্কা থেকে যাবে।
এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, প্রযুক্তিতে আমরা অনেক এগিয়েছি। আইটি ও আইটি এনাবেল সার্ভিসে বাংলাদেশের বড় সম্ভাবনা থাকলেও উচ্চ ডিউটি দিয়ে সেসব পণ্য দেশে আনতে হয়। অনেক দেশ এসব পণ্য আমদানিতে ডিউটি না রাখলেও আমাদের এখানে উচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে। পণ্য আমদানি সহজীকরণে কাস্টমসকে সহযোগিতামূলক আচরণ করার আহ্বানও জানান তিনি।
কাস্টমস আইন ২০২৩ এ জটিলতা ও আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় বাঁধা রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য সংগঠন ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে জনমত গঠনের মাধ্যমে এ আইন সংশোধনের তাগিদ দেন কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ এ এম মাহবুব চৌধুরী। এসময় বন্দরে দ্রুত পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সহজিকরণ করার করার তাগিদ দেন তিনি। এছাড়া রপ্তানি পণ্য বহুমূখিকরণের গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে কমিটির চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ’বৈশ্বিক পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে টিকে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। আমরা কোনো দেশের সাথে এফটিএ না করতে পারায় পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ব্যবসার সুযোগ নিচ্ছে।’ এসময় সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত আইনগুলো তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করার আহ্বান জানান তিনি।
বিজিএমইএ’র সদ্য সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইর পরিচালক ফারুক হাসান বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ বিভিন্ন দেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে সরকার কাজ করছে। এসময় এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর ট্রানজিশন পিরিয়ড ৩ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬ বছর করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনা করতে সরকারে প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ, আলহাজ্ব আজিজুল হক, নিয়াজ আলী চিশতী, মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যানবৃন্দ, সদস্যবৃন্দ ও সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: জোনায়েদ মানসুর, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৫৬ পুরানা পল্টন, ঢাকা -১০০০। রেজিস্টার্ড : ২৯২ ভূইয়া পাড়া প্রধান সড়ক, খিলগাঁও, ঢাকা- ১২১৯। সম্পাদকীয়: ০১৭৮৯৪২১৪৪৪, বার্তাকক্ষ : ০১৯১৩৫৫৫৩৭১। ই-মেইল: inextpr@gmail.com , (বিজ্ঞাপন), newsuddokta@gmail.com (বার্তাকক্ষ)