রমনার বটমূলে শেষ হয়েছে ছায়ানটের বৈশাখী উৎসব। রোববার সকাল সোয়া ৬টায় এ উৎসব শুরু হয়। উৎসবে অংশ নেন দেশের ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ধনী নির্বিশেষে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। ফলে পহেলা বৈশাখের এ আয়োজন এক বর্ণাঢ্য মহোৎসবে রূপ নেয়। পরে সকাল ৯টায় বৈশাখী উৎসব শেষ হয়।
উৎসবে যোগ দেয়া লোকজন জানান, সারা বিশ্বের বাংলাভাষী মানুষের জন্য আজ একটি বিশেষ দিন। পহেলা বৈশাখ বাঙালির সর্বজনীন লোক উৎসব। আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের মাধ্যমে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর দিন। পুরনো বছরের সব দুঃখ, জরা, কষ্ট, অভিমান ভুলে জীবনকে নতুন করে সাজানোর প্রত্যয় নেয়ার দিন। অতীতের ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধ করার দিন আজ।
সরজমিনে দেখা যায়, ভোর ৬টা থেকে রমনা বটমূলে মানুষের ঢল নামে। তাদের পোশাকে স্থান পায় লাল-সাদার প্রাধান্য। নারীরা লাল-সাদা শাড়ি, কাচের চুড়ি, দুল-মালায় বাঙালিয়ানায় সেজেছে। পুরুষের গায়ে শোভা পেয়েছে একই রঙ-নকশার পাঞ্জাবি। তারা রমনা বটমূল ছায়ানটের প্রভাতী অনুষ্ঠানের গান, কবিতা আসরে যোগ দেয়। অনুষ্ঠান শেষে তারা রমনা পার্কের বিভিন্ন অংশ ঘুরছে ও ছবি তুলছে।
রাজধানী ইসিবি থেকে রমনার বৈশাখী উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন জাহানারা আক্তার ও তার ছোট বোন সাবিনা আক্তার রুমি। তারা বলেন, ‘আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এ স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়। এ উৎসব আমাদের মনের ভেতরের সব ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা জোগায়।’
এবারের আয়োজনে সমবেত গান ১১টি, একক গান ১৫টি এবং পাঠ ও আবৃত্তিও ছিল। এ আয়োজন ঘিরে পুরো রমনা পার্ক এলাকা নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। পার্কের ভেতরে ডিএমপি, র্যাবের কন্ট্রোল রুম বসানো হয়েছে।
পর্যটকদের সহায়তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের টিম, লেকে নৌ-পুলিশের টিম, মেডিকেল টিম, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার, রক্তদানের বুথ রয়েছে। এছাড়া ডিএমপির পক্ষ থেকে বিনামূল্যে সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে।
জানা গেছে, সিসিটিভি দিয়ে পুরো এলাকার নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোনের মাধ্যমে আশপাশের এলাকায় নজরদারি করা হচ্ছে। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট স্ট্যান্ডবাই রয়েছে, তারা মহড়াও করেছে।