আর্থিক খাত দুর্নীতিমুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণার অধীনে এই খাতকে ডিজিটাল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। রোববার (৭ এপ্রিল) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত প্রাক বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
‘ম্যাক্রো অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও পরবর্তী বাজেট’ শীর্ষক সেমিনারে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, আর্থিক খাত দুর্নীতিমুক্ত করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। ডিজিটালাইজেশন করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে সব ক্ষেত্রে দুর্নীতিটাকে কমিয়ে আনা।
তিনি বলেন আগামী বাজেটে করছাড় কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ নিয়ে তালিকা করছে। এখন বহু খাতে আর করছাড় দরকার নেই। অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো আগামী বাজেটেও গুরুত্ব পাবে। এ ছাড়া ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে আলাপ–আলোচনা চলছে।
তিনি আরো বলেন, ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সেটা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এটা একটা বিরাট পরিবর্তন। এ পরিবর্তনের কারণে অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়েছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বাজেট প্রণয়নে সবার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয় তা না হলে এত ভর্তুকি কেন দেওয়া হয়। দেশের অর্থনীতির জন্য প্রাইভেট সেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিবছরের বাজেটে সেটা প্রতিয়মান হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সেমিনারে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি, মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ, সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ চেম্বারস অব ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রেসিডেন্ট, আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ, বিজিএমইএর ডিরেক্টর শামস মাহমুদসহ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যবৃন্দ।
সেমিনারে অর্থনীতিবিদরা বলেন, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ভুল সিদ্ধান্তের ফল এখনো ভোগ করছে জনগণ। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি, টানা ১৮ মাস উচ্চ মূল্যস্ফীতি বইতে হচ্ছে। এ অবস্থায় আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবতার নিরিখে প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একটা সময়ে সামষ্টিক অর্থনীতিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন পর্যায়ের মূল্যস্ফীতি ছিল। গত দুই বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়েছে। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিও স্থবির হয়ে পড়েছে। মূল্যস্ফীতির লাগামও কোনভাবে টানা যাচ্ছে না। সুদহারের ক্যাপ আগেই তুলে নেওয়া উচিৎ ছিল। কোভিডকালীন ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া হল, সেটা কেন পরবর্তীতেও বহাল রাখা হবে?বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, চড়া মূল্যস্ফীতি, উৎপাদনশীলতা হ্রাসের এ সময়ে যথাযথ সংস্কার ছাড়া অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে না। এমন আশাও করা যাবে না। বাজেটের আগে ব্যবসায়ীদের নানান সমস্যার কথা শোনা হয়, কিন্তু সমাধানে কোনও কার্যকরী উদ্যোগ নেয় না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এছাড়াও শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ। তার মতে, সুদের হার বাড়ানোর ফলে বিনিয়োগের অর্থ খরচ বেড়ে গেছে। বেড়েছে পণ্য উৎপাদন খরচও। আবার সুদের হার বাড়ানোর ফলে নতুন বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে। এতে কর্মসংস্থান ব্যাহত হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: জোনায়েদ মানসুর, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৫৬ পুরানা পল্টন, ঢাকা -১০০০। রেজিস্টার্ড : ২৯২ ভূইয়া পাড়া প্রধান সড়ক, খিলগাঁও, ঢাকা- ১২১৯। সম্পাদকীয়: ০১৭৮৯৪২১৪৪৪, বার্তাকক্ষ : ০১৯১৩৫৫৫৩৭১। ই-মেইল: inextpr@gmail.com , (বিজ্ঞাপন), newsuddokta@gmail.com (বার্তাকক্ষ)